Monday, 6 August 2012

রোভার কিউরিওসিটির বিশেষত্ব কী?


পাসাডেনা: ভারতীয় সময় সকাল এগারোটা বেজে দু মিনিট।লাল গ্রহের মাটি স্পর্শ করে 'রোভার কিউরিওসিটি'। আতঙ্কের শেষ সাত মিনিট কাটিয়ে মঙ্গলের বুকে চলমান গবেষণাগার পাঠানোর এই প্রচেষ্টা মোটেই সহজ ছিল না নাসার৷কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তিকে সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহার করে কিউরিওসিটি মঙ্গলের গোলাপি আকাশে একসময়ে ঢুকে পড়ে।ধীরে ধীরে মঙ্গলের মাটি স্পর্শ করে এই মহাকাশযান।সঙ্গে সঙ্গে নাসার জেট প্রোপালশন ল্যাবরেটরি ফেটে পড়ে উচ্ছ্বাসে।নাসার এই প্রথম সুখবরটি জানান ইঞ্জিনিয়ার অ্যালেন চেন।তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়া 'কিউরিওসিটির অবতরণ সফল।আমরা এখন মঙ্গলে নিরাপদ।'
তবে নাসার ছিল এটি সপ্তম মঙ্গল অভিযান।এছাড়াও এর আগে আমেরিকা এবং অন্য অনেক দেশ মঙ্গলে অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু কী এই কিউরিওসিটির বিশেষত্ব।
মঙ্গল গ্রহ অভিযানে পাঠানো নাসার সর্বাধুনিক যান ছিল এই রোভার, অর্থাৎ যা অন্য গ্রহের মাটিতে নেমে চলতে পারে।এটা দেখতে অনেকটা মাকড়সার মতো। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এটি আদতে একটি চলমান গবেষণাগার। মঙ্গলের মাটিতে নামার পর থেকে যার মূল কাজ হল রক্তিম গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খোঁজা।
অ্যাটলাস ভি ৫৪১ মহাকাশযানে সওয়ার হয়ে ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর কিউরিওসিটি পাড়ি জমিয়ে ছিল মঙ্গল গ্রহের উদ্দেশে।অবশেষে ভারতীয় সময় সকাল এগারোটা বেজে দু মিনিটে মঙ্গলের মাটিতে সফল অবতরণ করে রোভার।
তবে পরিস্থিতি ঠিকঠাক আছে কি না জানতে নিরন্তর যোগাযোগ রাখা হচ্ছিল মঙ্গলযানের কম্পিউটারের সঙ্গে। 
অবতরণের কয়েক মিনিটের মধ্যে খবরটি নাসা পেয়ে যায়, মঙ্গলের কক্ষপথে টহলদার উপগ্রহ মারফত। 
কিন্তু আগেও তো দু’-দু’বার লাল গ্রহে অভিযাত্রী গাড়ি (রোভার) নেমেছে! এ বারের বিশেষত্ব কী?
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, এই চলমান গবেষণাগারটি (কিউরিওসিটি) অনেক বেশি আধুনিক। উপরন্তু এটি আগের দু’টোর তুলনায় বিস্তর ভারী, আকারেও বড়। যানটির ভিতরে রয়েছে রাসায়নিক ও ভূতাত্ত্বিক পরীক্ষার নানা সরঞ্জাম। পাশাপাশি মঙ্গলের মাটি-পাথরের নমুনা বিশ্লেষণ করে ফলাফল সরাসরি পৃথিবীতে পাঠানোর বন্দোবস্ত রয়েছে এই মহাকাশযানে। ছকে বাঁধা সময়ের মধ্যে পুরো ‘দায়িত্ব’ যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদিত হতে পারে, কিউরিওসিটির কম্পিউটার-মগজে তার জন্য ঠাসা রয়েছে অত্যাধুনিক প্রোগ্রাম। তেজস্ক্রিয় জ্বালানি থেকে শক্তি উৎপাদনের ব্যবস্থাও মজুত রয়েছে সেখানে।সেইজন্য অতিরিক্ত সতর্কতা নেওয়া হয় কিউরিওসিটির অবতরণের সময়।
                                   নাসা-সূত্রের খবর, অবতরণের সময়ে ধুলোর ঝড়ে যাতে কিউরিওসিটির গবেষণাগারের কোনও ক্ষতি না হয়, সেই কথা মাথায় রেখেই নেওয়া হয়েছে বিশেষ সতর্কতা। তবে সব আতঙ্ককে অতিক্রম করে কিউরিওসিটি এখন  লাল গ্রহে পা রেখেছে সফলভাবে।

No comments:

Post a Comment